Skip to main content

দাঁত ব্যথায় ভুগছেন,,, জেনে নিন স্বস্তির কিছু টিপস

দাঁত ব্যথার প্রধান কারণ হলো ডেন্টাল ক্যারিজ বা দাঁত ক্ষয় রোগ। দাঁত ক্ষয় রোগে সাধারণত দাঁতের কোনো অংশে গর্ত হয়ে যায় ও দাঁত ব্যথা করে। দাঁত ব্যথার অন্যান্য কারণগুলো হচ্ছে আক্কেল দাঁতের সমস্যা, মাঢ়িতে ইনফেকশন, পুঁজ হওয়া, আঘাতের কারণে দাঁতে ফাটল, ক্যারিজ ইত্যাদি।
বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ শুরু হয়ে গেলো দাঁতের ব্যথা। আর আপনি ব্যথায় কাতরানো ছাড়া অন্য কিছু করতে পারছেন না মোটেও। দ্রুত দাঁতের ডাক্তার বা ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া খুবই জরুরী। কিন্তু তখনই কি করে সম্ভব? তার দারস্থ হতেও তো অন্তত কিছুটা সময় দরকার। 
তখনই কি করণীয়? জেনে নিন সেসবই। 
কিছু ঘরোয়া উপায় জেনে নিলে এই সময় খানিকটা সময়ের জন্য মিলবে স্বস্তি। অবসান ঘটবে ব্যথার।

>>> লবণ পানিঃ- একেবারে সাধারণ এবং প্রচলিত এই প্রক্রিয়া আসলেই কার্যকর। এক গ্লাস গরম পানিতে বেশি করে লবণ গুলে কুলকুচি করুন যতক্ষণ সম্ভব। দাঁতের ব্যথার কারন হিসেবে যদি কোনও জীবাণু থেকে থাকে তবে তা দূর হবে। এছাড়াও মাড়িতে রক্ত চলাচল ভালো করে দেয় এবং সাময়িকভাবে দাঁত ব্যাথা কমে আসে। তবে এই লবণ পানি খেয়ে ফেলবেন না যেন। কুলকুচি করে ফেলে দেবেন।
>>> লবঙ্গঃ-যে দাঁতটা ব্যথা করছে, তার ওপরে বা পাশে (যেখানে ব্যাথা) একটা লবঙ্গ রেখে দিন। মাড়ি আর দাঁতের মাঝে বা দুই চোয়ালের মাঝে এই লবঙ্গ চেপে রাখতে পারেন যতক্ষণ না ব্যথা চলে যায়। লবঙ্গের তেল ব্যবহার করতে পারেন তবে দুই-এক ফোঁটার বেশি নয়। লবঙ্গ গুঁড়োর সাথে পানি বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করেও লাগাতে পারেন।
>>> আদাঃ- এক টুকরো আদা কেটে নিন এবং যে দাঁতে ব্যথা করছে সে দাঁত দিয়ে চিবাতে থাকুন। যদি চিবাতে বেশি ব্যথা লাগে তাহলে অন্য পাশের দাঁত দিয়ে চিবিয়ে যে রস এবং আদার পেস্ট তৈরি হবে সেটা ওই আক্রান্ত দাঁতের কাছে নিয়ে যান। জিহ্বা দিয়ে একটু চেপে রাখুন দাঁতের কাছে। কিছুক্ষণের মাঝেই ব্যথা চলে যাবে।
>>> দারচিনি:- এসময়ে স্বস্তি দিতে পারে দারচিনি। এর মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল আর ব্যথা কমানোর গুন আছে ভরপুর। শুধু ব্যথা কমানোই নয়, এছাড়াও দারচিনি দাঁতকে আরো মজবুত করে তোলে। এইসব কারণে দারচিনি দাঁত আর মাড়ির জন্য খুবই উপকারী। দাঁত ব্যথা করলে একটা দারচিনির টুকরো নিয়ে যে অংশে ব্যাথা হছে সেই অংশের উপর রাখুন। হাল্কা করে চিবুতে থাকুন আর দারচিনি থেকে যে রসটা বেরোচ্ছে তা কিছুক্ষণ দাঁতের অংশে রেখে গিলে ফেলুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখবেন ব্যথা অনেকটা কমে আসছে।
>>> বরফ:  ঠাণ্ডা বরফের টুকরো দাঁতের ব্যথা নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। সরাসরি বরফ দাঁতে না লাগিয়ে বরফকে একটি নরম সুতি কাপড় দিয়ে মুড়িয়ে নিন এবং ব্যথার জায়গায় আস্তে আস্তে ঘষুন। ঠাণ্ডা বরফ দাঁতের ব্যথা কমিয়ে আরাম দেয়। তবে মনে রাখবেন সরাসরি বরফ দাঁত অথবা মাড়িতে লাগাবেন না। এতে ফল উল্টো হতে পারে।

>>> ভিনেগার:-  অল্প পরিমাণ আপেল সিডার ভিনেগার অথবা সাদা ভিনেগার তুলায় নিয়ে ব্যথার জায়গায় চেপে ধরে রাখুন।
>>> পুদিনা :- কয়েকটি পুদিনা পাতা মুখের ভেতরে নিয়ে কতক্ষন চিবালেও ব্যথা কমে আসে।
>>> আলু :- কাঁচা আলু কুচি করে সামান্য থেঁতলে নিন এবং হালকা লবণ মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় চেপে ধরে রাখুন।
>>> পেঁয়াজ:- টাটকা এবং রসালো এক টুকরো পেঁয়াজ কেটে নিয়ে সেটা আক্রান্ত দাঁতের ওপর চেপে রাখুন। পেয়াজের রসটা উপকারে আসবে।
>>> শসা:- শসাকে ফালি করে কেটে দাঁতে এবং মাড়িতে ধরে রাখুন। যদি ঠাণ্ডায় সেনসিটিভিটি না থাকে তাহলে ঠাণ্ডা শসা মাড়িতে লাগান। ঠাণ্ডা শসার রস দাঁত ও মাড়ির ব্যথা দ্রুত উপশম করে।
>>>লেবু :- লেবুর রসও দাঁতের ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে। লেবুর এক অংশ ফালি করে কেটে নিন এবং দাঁতে, মাড়িতে ঘষে ঘষে লেবুর রস লাগান।
>>> বেকিং সোডা:- একটা কটন বাড/এক টুকরো তুলা একটু পানিতে ভিজিয়ে সোডা লাগিয়ে নিন এবং দাঁতে মাড়িতে ঘষে ঘষে লাগান। এক চা চামচ বেকিং সোডা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে ঘরেই তৈরি করতে পারেন , কেমিক্যাল বিহীন মাউথওয়াশ।আরেক ভাবেও বেকিং সোডা ব্যবহার করা যায়। এক চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস গরম পানিতে গুলিয়ে সেটা দিয়ে কুলকুচি করে ফেলুন।
>>> টি ব্যাগ :- চা বানানর পর টি ব্যাগটি গরম থাকা অবস্থাতে ব্যথার জায়গায় ধরে রাখুন। চা পাতার "ট্যানিন" নামক উপাদান দ্রুত ব্যথা উপশম করে।

**** উপরোক্ত সবগুলো পদ্ধতিই আপনার সাময়িক আরামের জন্য । সম্পূর্ণ নিরাময় এসব থেকে পাওয়ার আশা করবেন না কিন্তু! মনে রাখবেন,দাঁত ব্যথা মানেই কোন একটি বিশেষ কারণে সমস্যা। সেই কারণটি খুঁজে বের করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারেন একজন ডাক্তারই।অবশ্যই ডেন্টিস্টের সাহায্য ছাড়া সে সমস্যার থেকে মুক্ত হওয়া যাবে না। ঘরোয়া কার্যকরী এই পেইনকিলারগুলো আপনাকে কিছুটা সময়ের জন্য ব্যথা থেকে মুক্তি দিচ্ছে বলেই ডাক্তার দেখানোর কথাটা ভুলে যাবেন না যেন। যন্ত্রণাময় সময়টুকু কাটিয়ে খুব তাড়াতাড়ি যোগাযোগ করুন একজন ডেন্টিস্টের সাথে। দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা বুঝুন, সুস্থ দাঁতে হাসুন প্রাণ খুলে ।

Comments

Popular posts from this blog

বিপদ আপনার দোড়-গোড়ায়...... তেলাপোকা থেকে সাবধান !

তেলাপোকা থেকে সাবধান! তেলাপোকা এক ধরনের ক্ষতিকর পোকা। যাবতীয় ময়লা আবর্জনা ও অন্ধকারে বাস, সহজে অভিযোজন করতে পারে বলে এরা পাঁচ কোটিরও বেশি বছর যাবৎ টিকে আছে। বেশিরভাগ নারীরাই তেলাপোকা বা আরশোলা দেখে ভয় পান।  আমিও তেলাপোকাকে ভয় পাই। তবে শরীরে বসা বা কামড়ের ভয় নয়, ভয় অন্য কারণে। তেলাপোকা যে অনেক রোগের বাহক! নানা রকমের পেটের পীড়া, আমাশয়, ডায়রিয়া, খাদ্যে বিষক্রিয়া, টাইফয়েড, লিভারের প্রদাহ-জন্ডিস, পোলিও—কত রোগের জীবাণুরই না বাহক তেলাপোকা! তেলাপোকা মূলত সর্বভুক। তবে খাবারের ময়লা-আবর্জনা আর বাথরুমের ময়লাই এদের প্রিয় খাবার। এসব ময়লা-আবর্জনা থেকে এদের গায়ে লেগে যায় নানা জীবাণু। পেটের ভেতরেও ঢুকে যায় অজস্র। তারপর রাতের আঁধারে যখন বসে কোনো খাবারের ওপর, তখন তেলাপোকার পা-পাখা-শরীর থেকে খাবারে লেগে যায় অসংখ্য জীবাণু। তা ছাড়া, খাবারের ওপর ঘোরাফেরা করার সময় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খাবারের ওপর মলত্যাগ আর বমিও করে তেলাপোকা। তেলাপোকার এসব মল আর বমির মাধ্যমেও খাবারে মিশে যায় হাজারো জীবাণু। জীবাণুমিশ্রিত এসব দূষিত খাবার খেলেই হয় নানা অসুখ। এ ছাড়া তেলাপোকার শরীর থেকে খসে যাওয়া ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অ...

আপনি কি জাম্বুরার উপকারিতা জানেন !!! .... জানলে অবাক না হয়ে পারবেন না।

জাম্বুরা ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল। এর পুষ্টিমান অনেক উন্নত। প্রতি ১০০ গ্রাম জাম্বুরার মধ্যে আছে ৩৭ কিলো ক্যালোরি, শর্করা ৯.২ গ্রাম, মুক্ত চিনি থাকে ৭ গ্রাম, সামান্য খাদ্যআঁশ, প্রোটিন ও ফ্যাট বিদ্যমান। বিটা ক্যারোটিনের পরিমাণ ১২০ মি.লি. গ্রাম, ভিটামিন ৬০ গ্রাম, ভিটামিন ‘বি’ও থাকে। ফলটিতে ক্যালরি কম থাকায় ডায়াবেটিস ও স্থুলকায়দের জন্য খুবই উপকারী। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটির দামও সাধ্যের মধ্যে। জাম্বুরাতে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। হাল্কা টক স্বাদের সুস্বাদু এই ফল ফলটি অত্যন্ত পুষ্টিকর। দেশের সীমানা ছাড়িয়ে গেলেও এই ফল পাবেন ভারত, চীন, জাপান, ফিজি, দক্ষিণ আফ্রিকা, এমনকি আমেরিকাতেও। তবে আলাদা আলাদা যায়গায় আপনি আলাদা আলাদা রকমের বাতাবী লেবু পাবেন। কোথাও কোথাও জাম্বুরার ভেতরের রসাল কোষগুলো হলুদ আবার কোথাও লাল বা গোলাপি হয়ে থাকে। তবে জাম্বুরার ভেতরের রসাল কোষগুলোর ঘনত্ব বেশি তাই খুব সহজেই এসব দিয়ে রস বা জুস তৈরি করা যায়। আজকে জানুন জাম্বুরা আমাদের কত উপকারী।     >>>  এতে আছে প্রচুর ভিটামিন সি তাই রক্তনালীর সংকোচন প্রসারণ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।   ...

সুস্বাস্থ্য পেতে আপনার করণীয়........

সুস্বাস্থ্য ও মেদহীন শরীর আমাদের সকলের কাম্য। কিন্তু সেটা অর্জন করতে একটু পরিশ্রম তো করতে হবেই। এছাড়া আমাদের অসচেতনেতার কারণে সুস্বাস্থ্য রয়ে যায় হাতের নাগালের বাইরে। যেমন ধরুন, সকালে নাস্তার আগে কী করতে হবে? অবশ্যই দাঁত ব্রাশ, অন্তত এমন জবাবটাই দেবেন সবাই। কিন্তু জানেন কি? দাঁত ব্রাশ করার পর্বটি নাশতার আগে নয় বরং নাশতার পরে করলেই ভালো। আর এতেই সুস্থ থাকবে আপনার দাঁত। এছাড়াও সুস্বাস্থ্য পেতে রয়েছে আরো কিছু উপায়। সবাই চায় নিজের সুগঠিত ও কার্যক্ষম শরীর। এই প্রত্যাশা পূরণ সহজ কাজ নয়। সে কারণে নিজের স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে কিছু হেলথ টিপস মেনে চলা উচিত। জেনে নিন সুস্বাস্থ্যের জন্য সেরা  হেলথ টিপস। >>>   সকাল বেলার নাস্তা করতে কখনওই ভুল করবেন না। সারাদিন কর্মক্ষম থাকার শক্তি অর্জনের জন্য সকালের নাস্তার বিকল্প নেই। নাস্তা হিসাবে টোস্ট, ফলমূল, শাকসবজি, পনির কিংবা দুধ জাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে পারেন। >>>  প্রতিবেলার খাবারে ভাত – তরকারীর উপর ঝাঁপিয়ে না পড়ে সবজি এবং ফলমূল খেতে অভ্যাস করুন। এইসব খাবার প্রচুর ভিটামিন, মিনারেল এবং শ্বাসতন্ত্রু দ্বারা পরিপূর্ণ...